নিজস্ব প্রতিবেদক : বিজয় দিবসে একাত্তরের শহীদদের রুহের মাগফেরাত কামনা অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বেহেস্ত কামনা করে প্রার্থনা করার ঘটনায় টাঙ্গাইলের গোপালপুর কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ড. ফায়জুল আমীন সরকারকে পুলিশ আটক করেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কার্যালয়ে আজ শনিবার সকাল আটটার দিকে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য অর্পণের আগে একাত্তরের শহীদদের রুহের মাগফেরাত কামনা করে দোয়ার আয়োজন করা হয়। উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ এ দোয়া অনুষ্ঠানে মোনাজাতে নেতৃত্ব দেন গোপালপুর কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ড. ফায়জুল আমীন সরকার।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা চেয়ারম্যান ইউনুস ইসলাম তালুকদার, উপজেলা নির্বাহী অফিসার দিলরুবা শারমীন, ওসি হাসান আল মামুন, ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মরিয়ম আক্তার মুক্তা, পৌর মেয়র রকিবুল হক ছানা, জেলা পরিষদ সদস্য মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল কাদের তালুকদার, একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির টাঙ্গাইল জেলা শাখার আহ্বয়ক অ্যাডভোকেট কেএম আব্দুস সালাম, সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আব্দুস সোবহান তুলাসহ আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মী, সকল সরকারি কর্মকর্তা এবং মিডিয়াকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
দোয়া অনুষ্ঠানে অধ্যক্ষ ড. ফায়জুল আমীন সরকার বলেন, ’হে আল্লাহ তুমি পঁচাত্তরে বঙ্গবন্ধু হত্যাকারি, যাদের ফাঁসি হয়েছে তাদের বেহেস্তো নসীব করো। হে আল্লাহ তুমি বিচারের পর তাদেরকে বেহেস্ত নসীব করো।’
দোয়া অনুষ্ঠানে তার এ ধরনের বক্তব্যে উপস্থিত সকলেই হতবাক হয়ে যান। উত্তেজনা দেখা দিলে উপস্থিত নেতারা সকলকে শান্ত করেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার দিলরুবা শারমীন জানান, দোয়া অনুষ্ঠানে এ ধরনের দুর্ভাগ্যজনক বক্তব্য শুনে তিনি নিজের কানকে প্রথমে বিশ্বাস করতে চান নি। একই কথা আবার রিপিট করলে তিনি মনোযোগ দিয়ে শুনার পর আশেপাশে যারা ছিলেন তাদের নিকট থেকে শতভাগ নিশ্চিত হয়ে দোয়া পরিচালনাকারীকে আটক করার নির্দেশ দেন।
ওসি হাসান আল মামুন বলেন, এমন ঘটনাটি সত্যিই হতবাক হওয়ার মতো। ঘটনার পর পরই তাকে আটক করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে মামলা নেয়া হবে।
উপজেলা চেয়ারম্যান ইউনুস ইসলাম তালুকদার জানান, গ্রেনেড হামলা মামলার প্রধান তিন আসামির বাড়ি এই গোপালপুরে। গোপালপুরের দুই জঙ্গি সম্প্রতি ক্রসফায়ারে মারা গিয়েছে। অধ্যক্ষ ড. ফায়জুলের মতো মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী মানুষ, যারা জামায়াত-শিবিরের সঙ্গে যুক্ত ছিল তাদের মুখ থেকে এমন কথা বের হওয়া অস্বাভাবিক কিছু নয়। আমরা তার কঠিন শাস্তি চাই।
সাবেক উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার এবং গোপালপুর কামিল মাদ্রাসার পরিচালনা কমিটির সভাপতি আব্দুস সোবহান তুলা জানান, মুখ ফসকে হয়তো তিনি এমন কথা বলেছেন। তবে তাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হবে।